মোঃ শোয়াইব,হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
পরিবার পরিকল্পনা সহকারী কম পেয়েছেন, শ্রমিক মজুরির হিসাব নাই
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি সাব ব্লকে ইপিআই (টিকা)’র পাশাপাশি গণহারে ১ম ও ২য় ডোজ করোনা টিকা প্রদানকারীদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ২৮ মার্চ চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের স্বাক্ষরে চট্টগ্রামের ১৪ টি উপজেলার প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের করোনা ভ্যাকসিনেটর, স্বেচ্ছাসেবক, শ্রমিক ও কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্টদের জন্য ১৬ লক্ষ ৪হাজার টাকা করোনার ভাতা প্রদান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের ভাতা বিতরণ করা হলেও বিতরণে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য সহকারী ৮ হাজার পেলেও পরিবার কল্যাণ সহকারী পেয়েছেন ১ হাজার কমে ৭ হাজার। স্বেচ্ছাসেবকদের টাকাও পেয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। সে টাকা থেকেও ২ হাজার ৬০০ টাকা করে কেটে রাখা হয়েছে। কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্ট (ইপিআই) নির্ধারিত ৮ হাজার পেয়েছেন। এদিকে শ্রমিক মজুরির ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা গোপন রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানান, ভ্যাটের নামে বিতরণে বৈষম্য করা হয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লিকসন চৌধুরী (অতিঃ) জানান, এ দপ্তরকে টিকাদানের ওই সময়ে দাপ্তরিক কোন চিঠি ইস্যু করা হয়নি। ভাতার ব্যাপারেও সঠিক জানিনা। তবে স্বাস্থ্য সহকারীর চেয়ে কম দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, প্রতিটা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, ইউপিআই কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী ৪৫ জন পরিবার পরিকল্পনা সহকারীর কেটে রাখা ৪৫ হাজার, স্বেচ্ছাসেবকদের ১লক্ষ ১৭ হাজার এবং শ্রমিক মজুরির ১লক্ষ ১০ হাজার টাকা কর্তৃপক্ষের পকেটে। তবে শ্রমিক মজুরির বিষয়ে ইপিআই মোহাম্মদ ইব্রাহীম পোর্টার (শ্রমিক) মানিক ও সেকান্দর বাদশাহকে ৬ ও ৮ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে জানালেও বাকী লাখ টাকার হিসাব দিতে পারেননি প্রতিবেদককে।
জানতে চাইলে শ্রমিক মজুরি গোপন রেখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুরজিত দত্ত বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও স্বেচ্ছাসেবকরা এ টাকা পাবেন। অন্য কেউ নয়। নিয়ম অনুযায়ী কিছু টাকা (ভ্যাট) কর্তন করা হয়েছে। বৈষম্যের প্রশ্নে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস. এম রাশেদুল আলম ও সদস্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহিদুল আলম বলেন, বিষয়টি কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মহোদয়কে জানানো হবে। টিকাদানকারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মানি ভাতা থেকে ভ্যাট কাটার কোন নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী যায়যায়দিনকে বলেন, এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার সাথে কথা বলেন।
এদিকে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার আসমা আক্তারের বিরুদ্ধে নির্মিত ট্রমা সেন্টারে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদের কোয়াটারে পরিবার নিয়ে নামেমাত্র ফি দিয়ে বসবাস, সবার সাথে অশোভন আচরণ এবং টিএলসি মোঃ শরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কর্মশালায় অনিয়ম দুর্নীতি, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের আবাসিকে হাসপাতাল রুম বসবাস, গ্যাস বিল না দিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি ডা. সুরজিত দত্ত।
Leave a Reply